সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় স্কুলশিক্ষিকা (প্রেমিকা) রহিমা খাতুন হত্যা মামলায় প্রেমিকসহ দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ৩৪ ধারায় আরও তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক মো. আবুল বাশার মিঞা এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ঝাউল উত্তরপাড়া গ্রামের নিহত রহিমা খাতুনের প্রেমিক হাবিবুর রহমান হাবিব (৪১) ও হাবিবের সহযোগী একই থানার চৌধুরী ঘুঘাট গ্রামের আইয়ুব আলী (৪৩)।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের পেশকার লিটন ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, রহিমা খাতুন (২২) নিজ বাড়িতে থেকে ব্রাক সমিতির আনন্দ স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এমতাবস্থায় ২০১৮ সালের ৩০ মে সলঙ্গা থানার বেতুয়া গ্রামের আক্তার হোসেনের জমির পূর্ব পাশে বাবলাতলা খালের কিনারে হাঁটু পানিতে রহিমা খাতুনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তাঁর পরিবারকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সলঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালে পিবিআই রহিমা খাতুনের প্রেমিক হাবিবুর রহমান হাবিবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, রহিমা খাতুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয়ের মধ্যে বিয়ে নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে হাবিবুর রহমান হাবিব তার সহযোগী আইয়ুব আলীকে সঙ্গে নিয়ে রহিমা খাতুনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রহিমা খাতুনকে হত্যা করে খালের পাশে লাশ ফেলে রাখে। পরে হাবিবুর রহমান হাবিব আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
তদন্ত শেষে পিবিআই হাবিবুর রহমান হাবিব ও আইয়ুব আলীকে আসামি করে ২০১৯ সালের ৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজ হাবিবুর রহমান হাবিব ও আইয়ুব আলীকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩৪ ধারায় ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।