সুদানে সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে অন্তত ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত প্রায় ২০০ জন।
সংঘাতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে জাতিসংঘের তিনজন কর্মী রয়েছেন। একটি সামরিক ঘাঁটিতে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনায় তাঁরা নিহত হন।
গতকাল শনিবার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালায় আরএসএফ। এ অভ্যুত্থানচেষ্টার জেরে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের সংঘর্ষ বাধে।
সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনাসদর ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সুদানের গণতন্ত্রে ফেরার একটি প্রস্তাব নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এ উত্তেজনা এখন সংঘাতে রূপ নিল।
সেনাবাহিনী ও আরএসএফ উভয়ই দাবি করেছে, তারা রাজধানী খার্তুমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এসব স্থানে রাতভর লড়াই চলছিল। এ ছাড়া দারফুর অঞ্চলের শহরগুলোসহ দেশটির অন্যত্রও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, সামরিক উড়োজাহাজগুলো আরএসএফের ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে।
দেশটির বিমানবাহিনী গতকাল রাতে সাধারণ মানুষকে তাদের বাড়িতে থাকতে বলে। তারা রাতে আরএসএফের কার্যকলাপ আকাশ থেকে পর্যবেক্ষণ করে।
রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দারা বিবিসিকে তাঁদের আতঙ্ক ও ভয়ের কথা জানিয়েছেন। এক অধিবাসী বলেছেন, তাঁর পাশের বাড়িতেই গুলি চালানো হয়েছে।
সুদানের একটি চিকিৎসক ইউনিয়ন জানিয়েছে, সহিংসতায় অন্তত ২৭ জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন।
হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক, তা জানা যায়নি বলে উল্লেখ করেছে চিকিৎসক ইউনিয়ন। তবে আগে তারা বলেছিল, তিনজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জাতিসংঘের যে তিন কর্মী নিহত হয়েছেন, তাঁরা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে (ডব্লিউএফপি) কর্মরত ছিলেন। সংঘর্ষের ঘটনায় সংস্থাটির দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। ডব্লিউএফপির বেশ কিছু গাড়িতে আরএসএফ লুটপাট চালিয়েছে।
২০২১ সালের অক্টোবরের একটি অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক জেনারেলরা সুদান পরিচালনা করছেন। তাঁদের নেতা সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। উপনেতা আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। এই দুই পক্ষের মধ্যেই লড়াই চলছে।
জেনারেল হেমেদতি বলেছেন, সব সেনাঘাঁটি দখল না করা পর্যন্ত তাঁর সেনারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
জবাবে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, আরএসএফ বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনা নয়।