দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন সয়ার ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত হিসাব সহকারী। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে তিনি নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করেও নিচ্ছেন সরকারি বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ৫নং সয়ার ইউনিয়ন পরিষদে।
সরেজমিনে একাধিক দিন সয়ার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা গেছে, ইউপি সচিবসহ অন্যান্যরা পরিষদে উপস্থিত হয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করলেও উপস্থিত থাকেন না পরিষদের হিসাব সহকারী আতিকা আক্তার। প্রতি মাসে নামমাত্র কয়েকদিন অফিসে এসে পুরো মাসের স্বাক্ষর করেন বলেও জানান পরিষদের সচিব। হিসাব সহকারীর অনেক কাজ থাকলেও আতিকা অফিসে না আসায় তার কাজগুলো সচিবকেই করতে হয় বলেও অভিযোগ করে বলেন ইউপি সচিব এনামুল হক মন্ডল। অফিসে দেখা না পেয়ে আতিকার মুঠোফোনে ফোন করা হলে অধিকাংশ সময়ই তিনি ফোন রিসিভ করেন না। কখনো কখনো ফোন রিসিভ করলেও তিনি ডিসি অফিসে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। আবার কখনো বলেন তার সাংসারিক ঝামেলার কারনে তিনি অফিসে আসতে পারছেন না কয়েকদিন।
গোপন সূত্রে জানা যায়, সয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটকে কৌশলে ম্যানেজ করে অফিস ফাঁকি দিয়ে সরকারি বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আতিকা বিনতে রহমান। প্রতি মাসে মাত্র ৫ থেকে ৬ দিন কর্মস্থলে নামমাত্র উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যানের সুপারিশে নিচ্ছেন পুরো মাসের বেতন ভাতা। চেয়ারম্যানের যোগ সাজোস থাকায় আতিকার এসকল অনিয়মের বিষয়ে মুখ খুলতে ভীত পরিষদের অন্যান্য কর্মচারীরা। ফলে দিনের পর দিন অফিস না করেও অফিসের সকল সুবিধা ভোগ করছেন তিনি।
এবিষয়ে সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের বক্তব্য নিতে সোমবার (২৪ জুলাই) ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে গিয়ে দেখা পাওয়া না যাওয়ায় তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তারাগঞ্জ চৌপথীস্থ পাইলটের ডাক্তারী চেম্বারে দেখা করে আতিকার অফিস ফাঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আতিকা এক সময় ঠিকমতো অফিস আসতো না। কিন্তু এখন আসে। তার বাবার শারিরীক অবস্থা খারাপ থাকায় আজকে (সোমবার) আসেনি। আমাকে ফোনে জানিয়েছে আজ সকালে। আমি মৌখিকভাবে একদিনের ছুটির অনুমতি দিয়েছি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) অফিসে এসে ছুটির দরখাস্ত দিবে।
পাইলট বক্তব্যে আতিকার ছুটির দরখাস্ত মঙ্গলবার দেওয়ার কথা জানালেও মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে পুনঃরায় গিয়েও এই রিপোর্ট লেখার আগে পর্যন্ত হিসাব সহকারী আতিকা অফিসে আসেননি।
এবিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, আতিকার বিষয়ে জানি। কিছুদিন আগে তাকে শোকজ করা হয়েছিল। আমি চেয়ারম্যানের কাছে মাঝে মাঝে আতিকার বিষয়ে খোঁজ খবর নেই। চেয়ারম্যান তো বলে এখন ঠিকমতোই অফিস করছে। আতিকা যেহেতু চেয়ারম্যানের অধীনস্থ কর্মচারী তাই চেয়ারম্যানের আপত্তি ছাড়া আতিকার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই আমার।