পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে মো. ইব্রাহিম আহসান শাওন (৩৫) নামের এক যুবককে হাত-পায়ের রগ কেটে, উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পৌর কাউন্সিলর জাকি হোসেন জুকু, খায়রুল হাসনাত খালিদসহ ১০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার ১০ বছর পর ভিকটিম শাওনের দায়েরকৃত নালিশী মামলা আমলে নিয়ে কলাপাড়া থানার ওসিকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের আদালত এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মাহবুব মিয়া আদালতের এ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সন্ধ্যায় জুকু, খালিদ, বাবু, নাহিদসহ ১০ সশস্ত্র সন্ত্রাসী শহরের ঝলক ফ্যাশন হাউজের সামনের সড়কে শাওনকে হত্যাচেষ্টা করে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি কুপিয়ে ভিকটিমের শরীরে গুরুতর হাড় কাটা জখম করা হয়। একপর্যায় শাওনের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা তাকে রক্ষার চেষ্টা করলে জুকু-খালিদসহ তাদের লোকজনের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে ধাওয়া করে। নারকীয় এ ঘটনার পর ভিকটিমের পিতা থানায় অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিলে পুরো পরিবারসহ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় আরও বলা হয়, ভিকটিমের পায়ের হাঁটুর বাটি এবং হাত ও পায়ের রগ আসামিরা কেটে দেয়ায় দীর্ঘ চিকিৎসায় হাত পায়ের রগ জোড়া না লাগায় এবং পায়ের বাটি না থাকায় পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে। অবশেষে সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তার উপর নৃশংসতার বিচার পেতে আদালতে মামলা দায়ের করেন শাওন।
মামলা দায়েরের পর গণমাধ্যমকে শাওন বলেন, আমার ওপর জুকু-খালিদ বাহিনী যে জঘন্য পৈচাশিকতা চালিয়েছে ১০ বছর পর হলেও আমি এর বিচারের জন্য আদালতে এসেছি। আমি ন্যায়বিচার পেতে সবার সহযোগিতা চাই।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর জাকি হোসেন জুকু বলেন, আমি ও আমার ছোট ভাই কাউন্সিলর খালিদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা চক্রান্ত শুরু করেছে। অসৎ উদ্দেশ্যে ১০ বছর পূর্বের ঘটনার সঙ্গে আমাদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।