কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার মাঝের চর তা’লিমুল কুরআন নুরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্র শিশু মোত্তাকিন (৯)। সে বাবা মায়ের আদরের সন্তান। ঈদের দিন এলাকার সংঘবদ্ধ চক্রের নির্মম এবং বর্বর হামলায় গুরুতর আহত হয় মোত্তাকিন। পৌশাচিক হামলায় তার কান ঘেঁষে মাথায় ছয়টি সেলাই দেয়া হয়। বাঁশের তৈরি হালঙ্গা মাথায় ঢুকার কারণে গুরুতর আহত অবস্থায় ৭দিন ধরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু মোত্তাকিন। অসহনীয় যন্তনায় হাসপাতালের বেডে মৃত্যু য্ত্রণায় কাতরাচ্ছে অবুঝ শিশু মোত্তাকিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের চর কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকেন। ৬ মাস পর পর আসতেন বাড়িতে। তার অবর্তমানে স্ত্রী মিনা বেগমেরা উপর গ্রামের কিছু বখাটে লোকজন পরকীয়াসহ নানা রকম মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সামাজিকভাব কোণঠাসা করে রাখে। এর প্রতিবাদ করে আসছিল ওই নারী। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকেও বার বার নিরপরাধ হিসেবে প্রমাণিত হয় শিশু মোত্তাকিনর মা মিনা বেগম। ২৮জুন নিজদের ভুল স্বীকার করে বখাটেরা ওই গৃহবধূর হাত ধরে ক্ষমা নেয়। সালিশ বৈঠকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি মানতে না পারা এবং অপবাদ দিয়েও ওই নারীকে ফাঁসাতে না পেরে গত ২৯ জুন ঈদুল আযহার দিন রাতে বখাটেরা দেশীয় অস্ত্রে সংঘবদ্ধ হয়ে ১৫/২০ জনের একটি দল আইনুল নামের এক যুবকের নৃতত্বে হামলা চালায় ওই পরিবারের উপর। এতে আহত হয় ঘরে থাকা মোত্তাকিন, মিলন, আব্দুস সালাম ও মিনা বেগম। হামলা চালিয়ে মুহুর্তে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। সবাই কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও শিশু মোত্তাকিনের অবস্থা অপরিবর্তনশীল।
এ ঘটনায় শিশু মোত্তাকিনের পিতা মোঃ আব্দুস সালাম বাদী হয়ে গত ৪ জুন কুড়িগ্রাম সদর সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-৩৩/২৩।
ঘটনায় অভিযুক্ত আইনুল হকের সাথে যোগাযাগের চেষ্টা করলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
শিশু মোত্তাকিনের মা মিনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় থাকায় আমার উপর মিথ্যা পরকীয়ার অপবাদ দেয় আইনুল সহ এলাকার যুবকরা। তারা বার বার আমাকে অপরাধী সাজানোর চেষ্টা করেও না পেয়ে ঈদের দিন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আমি প্রাণে বাচলেও আমার সন্তান মোত্তাকিনকে হালঙ্গা দিয়ে অমানবিক হামলা চালায়। সে এখন মৃত্যুর মুখে। আমি এর বিচার চাই।