চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ফাতেমা বেগম(৩৫) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২১জানুয়ারি রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে মারুফ গোমস্তার সমাজে সালমান ভবনে। খুনের শিকার মহিলা ফাতেমা বেগম তিনি চার সন্তানের জননী। এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, হত্যার শিকার মহিলার স্বামী আনোয়ার হোসেন(৪৫) একজন প্রবাসী, সে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। তাদের ধারণা গভীর রাতে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যা করা হয়েছে।
জানাগেছে অভিযুক্ত আনোয়ার গোপনে বিয়ে করে গত কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তোলার চেষ্টা করে। প্রথম স্ত্রী ফাতেমা দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করলে তাঁর বিবাহিত বড় মেয়েকেসহ আটক করে মারধর করে। পরবর্তীতে মেয়ের জামাই উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম মিনহাজ থানায় অভিযোগ করলে মুচলেকায় মীমাংসা হয়। ফজলুল করিম মিনহাজ তাঁর শ্বাশুড়ির খুনের ঘটনায় অভিযোগ করে বলেন, আমার শ্বশুরের দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনা জানাজানি হলে তিনি সবার সাথে হিংসাত্মক আচরণ শুরু করেন। আমার শ্বাশুড়িকে মেরে ফেলার জন্য কয়েকবার আক্রমণ করেন। নিহত ফাতেমা বেগম এর ছোট মেয়ে রিয়া বেগম এর স্বামী ফজলুল করিম মিনহাজ অভিযোগ করে আরো বলেন, বড় মেয়ে আমার শাশুড়ী কে দেখাশোনা করতো।গতকাল আনোয়ার হোসেন নতুন স্ত্রী আনার পর বড় মেয়ে কে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।আমাদের ধারণা আমার শাশুড়ী কে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ফাতেমার বড় মেয়ে প্রিয়া বেগমের স্বামী হাসান বলেন কিছু সম্পত্তির দলিল ও স্বর্ণালংকার ছিল আমার শাশুড়ীর কাছে। নতুন বউ আনার জন্য স্বর্ণলংকার চেয়েছিল আনোয়ার। আমার শাশুড়ী না দেয়ায় তাকে ও আমার স্ত্রী কে তিন দিন আগে মারধর করে বেঁধে রাখা হয়েছিল।আমি এসে পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করি।পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আবার ছেড়ে দেয়।এরপর সে আরো বেপরোয়া হয়ে যায়। নিহতের বড় মেয়ে ও তার দুই ভাই ইউসুফ ও নজরুল অভিযোগ করে বলেন দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে ফাতেমা বেগম এর সম্মতি ছিল না। তাকে সবসময় মারধর করা হতো।আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার এস আই জয়নুল বলেন হত্যার ঘটনা এখনো দৃশ্যমান হয়নি।মেডিকেল রির্পোট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।সুরতহালে জন্য লাশ মেডিকেল এ পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামী আনোয়ার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছি নিহত ফাতেমা বেগম আড়াই বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিলেন।
জানা গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত ফাতেমার সাথে তার স্বামীর দীর্ঘদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না।এসব বিষয়ে থানা পুলিশ এর মাধ্যমে ৩/৪ দিন আগে আপোষ সমাঝোতাও হয়েছিল। কিন্তু তার পরের দিন রবিবার রাতে আনোয়ার নতুন আরেকটি বিবাহ করে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে ঘরে উঠে এবং তার আগের ছেলে মেয়েদের ঘর থেকে বের করে দেয়। পরে তাহারা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।নিহত ফাতেমার ভাই ইউসুফ জানান আনোয়ার সোমার সকাল ৮ টার দিকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসী কর্তৃক তার স্ত্রী খুন হয়েছে এবং তাকে ও আটক করে রেখেছে এমন খবর তার ছেলেমেয়েদের মোবাইলে জানালে খবর পেয়ে এলাকাবাসী ঐ বাড়ি ঘেরাও করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তদন্ত মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আসামি আটক করেছি।লাশ ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।