প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে জমি বিক্রির অভিযোগে মোংলা পোর্ট পৌরসভার এক কাউন্সিলরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করে শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। মোংলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। কাউন্সিলরসহ বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকার মৃত হরসিদ রায়ের ছেলে তারাপদ রায় ও দুর্গাপদ রায়কে মালিক বানিয়ে এ দু’জনের নামে পৌর মহিলা কাউন্সিলর শিউলী আক্তার, বুড়িরডাঙ্গার দ্বিজবর মন্ডলের ছেলে প্রদীপ মন্ডল ও মালগাজী এলাকার মাহবুব মাস্টারসহ কয়েকজন মিলে ৫ একর ৫৬ শতক জমি প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে। ২৮ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেই জমি থেকে কিছু অংশ কবলা মুলে অন্যত্র বিক্রি করতে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যায় এ প্রতারক চক্রটি। সরকারি রেজিস্ট্রি অফিসের ১নং বইয়ের ক্রমিক নং-১৮৭, দলিল নং-১৮৫, খাজনা পরিশোধের রশিদ ও সকল সই মহরকৃত সকল কাগজপত্র জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করে তার ফটোকপি মোংলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দেয় এ চক্রের সদস্যরা। সাব রেজিস্ট্রার অফিসার আসামিদের দাখিলকৃত দলিল ও সরকারি সকল কাগজপত্র যাচাইকালে তা রেজিস্ট্রি অফিস এজলাসেই জাল ও ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় প্রতারক চক্রের সদস্য ভারত প্রবাসী তারাপদ রায়, দুর্গাপদ রায় ও প্রদীপ মন্ডল নামের এ ৩ জনকে আটকে রাখে রেজিস্ট্রি অফিসের লোকজন। এ সময় পৌর কাউন্সিলরসহ বাকিরা ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। জাল কাগজপত্র তৈরি ও ভুয়া দলিলে জমি বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বুধবার রাতে মোংলা সাব রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার দে বাদী হয়ে আটক ৩ জনসহ মোংলার আঃ সামাদ তালুকদারের মেয়ে পোর্ট পৌরসভার (সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯) মহিলা কাউন্সিলর শিউলী আক্তার, মালগাজী গ্রামের মোকলেজ শেখের ছেলে মাহবুবুর রহমান শেখ, দ্বিগরাজ এলাকার মৃত আঃ লতিফ মৃধার ছেলে ইলিয়াস মৃধা, বুড়িরডাঙ্গার বৈরাগীখালী গ্রামের সুনিল তরফদারের স্ত্রী দিপা তরফদারসহ ৭ জনের নামে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেন এবং আটক ৩ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন সাব রেজিস্ট্রার। আটকদের শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান সহকারী পুলিশ সুপার।মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে জমি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন কয়েক প্রতারক। এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার রাতে সাব রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে মোংলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এবং আটক ৩ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আটকদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।