কক্সবাজার পৌরসভার মাঝের ঘাট- খুরুশকুলের এই সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। ছবি: দৈনিক আশ্রয় প্রতিদিন।
এম এ সাত্তার
প্রায় দেড় যুগ পেরিয়ে গেছে সেতুটির বয়স। ভাঙন ধরেছে তার শরীরে। লোহার পাটাতনে জং ধরে বড় বড় গর্ত আর ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে সেতুটি। রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে গেছে।
ব্যস্ততম কক্সবাজার পৌরসভা- খুরুশকুল-চৌফলণ্ডী ভায়া ঈদগাঁওর বিকল্প এই ব্যস্ততম সড়কের বেইলি সেতুটির এখন মর দশা। এ অবস্থাতেই সেতুটির ওপর দিয়ে চলছে প্রতিদিন কয়েক হাজার ভারী যানবাহন।
স্থানীয় ও কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নব্বই দশকে কক্সবাজার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড মাঝেরঘাট নামক স্থানের বাঁকখালী নদীর ওপর খুরুশকুল সেতু নামে বেইলি সেতু নির্মিত হয়। সেতুটি চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়লে মাঝে মধ্যে সংস্কার করা হলেও এগুলোর স্থলে এখন নতুন সেতু তৈরির সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন উপকারভোগীরা।
পুরোনো হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে এই মাঝেরঘাট সেতু। জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করে যানবাহন চলাচল করছে সেতুর ওপর দিয়ে। বেইলি সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নোংরা, মাইক্রোবাস, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি, মালবাহী ডাম্প ট্রাক চলাচল করে। গাড়ি চলাচল/যাতায়াতের সময় পুরো সেতুই কাঁপতে থাকে। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারী। এ অবস্থায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
সদর উপজেলার খুরুশকুল ঘোনাপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ বলেন, সেতুটি বিভিন্ন ইউনিয়নের হওয়ায় প্রতিদিন ভারী বোঝা নিয়ে হাজার হাজার যানবাহন সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। যে কোন কারণে সেতুটি ভেঙে পড়লে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে।
সদরের খুরুশকুল কুলিয়াপাড়ার আব্দুল হক বলেন, ‘যখনই বেইলি সেতুর ওপরে ভারী যানবাহন ওঠে, তখনই সেতু কাঁপতে থাকে। ভয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা কে চিন্তা করে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এই সেতুটির ওপর দিয়ে বছরের পর বছর চলাচল করে আসছি আমারা।
ডাম্পার ট্রাকচালক আমিন উদ্দিন বলেন, ‘খুব ভয় নিয়ে খুরুশকুল মাঝের ঘাট সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। সেতুর যে অবস্থা তাতে খালি গাড়ি নিয়ে যেতেও ভয় হয়। গাড়ি নিয়ে উঠলেই সেতু কাঁপতে থাকে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহে আরেফিন মুঠোফোনে বলেন, সেতুটির বিষয়ে সব সময় খবর রাখেন। সেতুর পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, হবে। নষ্ট হয়ে যাওয়া পাটাতন
প্রতি সপ্তাহে ২/১ বার করে রিফেয়ার করে দেন। যখন যেভাবে রিফেয়ার করা প্রয়োজন সেভাবে করা হয়। আর যদি বেশি নষ্ট হয়ে যায় পুরো পাটাতন পাল্টে দেন। খুব শীঘ্রই ওখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণ হবে। এ নিয়ে এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাথে ঋণ চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে। কাজও বহু দূর এগিয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সওজ এর এ নির্বাহী প্রকৌশলী।