ঢাকাশনিবার, ১৮ই জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
ঢাকাশনিবার, ১৮ই জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইসিটি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আফ্রিকা
  6. ইসলাম
  7. এশিয়া
  8. কলাম
  9. ক্রিকেট
  10. খেলা
  11. চাকরী
  12. জাতীয়
  13. জেলা
  14. জেলা সংবাদ
  15. নিয়োগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুই সাংবাদিককে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসাতে চায় এসআই আমিনুর ও আজিজ মনির চক্র

সুমন খান
ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ ১:৩১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা ওয়াসার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী মনির হোসেন পাটোয়ারীর ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য অনুসন্ধানে গত ১ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনে বক্তব্য নিতে যান ঢাকা প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার সোহাগ হাওলাদার ও মো: ইস্রাফিল। ৩০ নভেম্বর মুঠোফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে ব্যস্ততা দেখিয়ে সাংবাদিক সোহাগ ওলাদারকে ওয়াসা ভবনে যেতে বলেন মনির হোসেন পাটোয়ারী। কথা অনুযায়ী ডিসেম্বর ১ তারিখে ওয়াসা ভবনে গেলে স্বঘোষিত সিবিএ নেতা আজিজুল আলম খান ও মনির হোসেন পাটোয়ারী প্রথমে সাংবাদিকদের সাথে ভালোভাবে কথা বলেন। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কথার উত্তর না দিয়ে হঠাৎ সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন তারা। ওই সময় তাদেরকে ভুয়া সাংবাদিক আখ্যা দিয়ে আজিজুল আলম খান ও মনির হোসেন পাটোয়ারী দুই সাংবাদিককে ব্যাপক নির্যাতনসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এছাড়া মনির পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে কে বা কারা তথ্য দিয়েছে তা জানার জন্য নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন আজিজুল আলম খান। ওইদিন ওয়াসা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইউনিয়ন অফিসে দুই ঘন্টারও বেশি সময় সাংবাদিকদের আটকে রেখে এভাবেই নাজেহাল করেন আজিজ ও মনির গং। পরবর্তীতে আজিজুল আলম খানের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের সাথে থাকা মোট ৪টি মোবাইল যার মডেল নাম্বার (১) OPPO- A58 (২) Xiaomi POCO-M3 (৩) Samsung – A50 (৪) GDL- G8 (বাটন), দুই সাংবাদিকের মানিব্যাগ থেকে নগদ ২৭,৫০০/- (সাতাশ হাজার পাচশত) টাকা, সোহাগ হাওলাদারের ডান হাতে থাকা ৫ ভরি ৯ আনা ৩ রতি ওজনের ১টি রুপার ব্রেসলেট, দু’জনের প্রেস আইডি কার্ড,গাড়ির চাবিসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেন আজিজ ও মনিরের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী। পরে ঘটনাস্থলে তেজগাঁও থানার এস আই আমিনুর রহমান ও তার টিম আসলে পরিস্থিতি সাময়িক শান্ত হয়। রক্ষক ভক্ষকের ভুমিকায় এস আই আমিনুর, আজিজ-মনিরদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে সাংবাদিকদের ৫লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসানোর পরামর্শ দেন। এস আই আমিনুর, আজিজ ও মনির গংদের বলেন, আপনারা সাংবাদিকদের সাথে যা করেছেন এখান থেকে তাদেরকে এভাবে ছেড়ে দিলে আপনাদের সমস্যা হতে পারে। আপনারা বলবেন এর পূর্বেও আমাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছে এখন আবার টাকা নিতে ওয়াসা ভবনে আসছে। তাই আমরা তাদেরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছি। এভাবে বললে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা নিতে পারব। ওইদিন এস আই আমিনুরের পরামর্শ অনুযায়ী সাংবাদিকদের চরম হেনস্তার অংশ হিসেবে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার নাটক সাজায় আজিজ ও মনির গং। দুই সাংবাদিকের সাথে থাকা সুজুকি সুইফট ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি (যা কারওয়ান বাজার প্রথম আলো পত্রিকা অফিসের সামনে রাখা ছিল) জব্দ তালিকায় দেয়ার জন্য এসআই আমিনুর জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যান। এমনকি থানার সামনে সাংবাদিকদের গাড়ি পার্কিং করার সময় এসআই আমিনুর মনির পাটওয়ারীকে বলেন “ভাই মনির ভাই, চাইল আসছে কোথায় দেখছেন। কোথা থেকে কোথায় আসছে দেখছেন। এদের বহুত কিছু আছে বোঝলেন। অনেক কিছুই আছে ওনাদের সম্পাদক-মম্পাদক সব ই টি কইরা! মোটামুটি অনেকেই ঘটানার সাথে জড়িত আছে। আমি ইচ্ছা করলে এই দুইটারে জিম্মি কইরা এখন ব্যবসা করতে পারি। আমি কইয়া দিলাম একটা বুদ্ধি, আপনি মামলা মোকদ্দমা না দিয়া দুইটারে জিম্মি কইরা ব্যবসা একটা কইরা ফেলতে পারেন। গাড়ি আছে, সম্পাদক-মম্পাদক ডাইকে মাইকে সব আটকাইয়ে টুপ কইরা ব্যবসা একটা কইরে ফেলতে পারেন। ওটা অবশ্য প্রকাশ্যে না, মানুষ জানলে তো ইজ্জত থাকবে না। দুইটা মোবাইল আর গাড়ি এই তিন টা আগে জব্দ করব। এই ছোট বাটন ফোন জব্দ করে লাভ নেই”
এছাড়া দুই সাংবাদিকের বাবা-মা তুলে গালমন্দসহ অনেক খারাপ ভাষায় বাজে মন্তব্য করেন এসআই আমিনুর। পরবর্তীতে তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোবারক হোসেন উভয় পক্ষের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে, এসআই আমিনুরের শেখানো বুলি আউরে মনির পাটোয়ারী বলেন, সাংবাদিকরা আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে আমি তাদের বিরুদ্ধ চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করতে চাই। এরপর ওসির সামনে সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্য পেশ করে বলেন, আমরা শুধুমাত্র মনির পাটোয়ারীর বক্তব্য নেয়ার জন্য ওয়াসা ভবনে এসেছিলাম এবং তিনিই বক্তব্য দিবে বলে আমাদের এখানে আসতে বলেছিলেন। চাঁদা চাওয়া তো দূরের কথা আমরা এখনো এটাই বুঝতে পারছি না যে আমাদের আসলে অপরাধ টা কি? সাংবাদিকতা করা কি অপরাধ? নাকি অনিয়ম-দূর্নীতির অনুসন্ধান করে সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছায়ের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য পত্রিকার প্রকাশের মাধ্যমে জাতির কাছে তুলে ধরা অপরাধ? আমরাও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাই। কারণ, ওনারা শুধু শুধু আমাদেরকে অপমান, অপদস্থ ও অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। আমাদের সাথে থাকা যাবতীয় সবকিছু ছিনিয়ে নিয়েছেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ওসি মোবারক হোসেন বলেন, যা হবার সেটা হয়ে গেছে, আপনারা সবাই সমাজের সভ্য মানুষ, ওনারা সরকারি চাকরিজীবী আপনারা সাংবাদিক। তাই কেউ কারো প্রতি বাড়তি অভিযোগ না এনে বিষয়টি যদি সমাধান করা যায় সেটাই সবার জন্য ভাল হয়। পরবর্তীতে ঢাকা প্রতিদিনের চীফ রিপোর্টার তানিম আহমেদ ও মফস্বল সম্পাদক রিয়াজুর রহমান রিয়াজসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও মনির হোসেন পাটোয়ারীর লোকজন একত্রিত হয়ে তৎকালীন পরিস্থিতিতে বিষয়টা মীমাংসা করেন।
ওইদিন ওয়াসা ভবনে প্রবেশ করে সোহাগ হাওলাদার তার মোবাইলে গোপন ভিডিও চালু করে রেখেছিলেন। তবে, এসআই আমিনুর তাদের মোবাইল ফেরত দেয়ার পূর্বে মোবাইলের যাবতীয় সবকিছু ফরমেটে করে দেন।
সাংবাদিকদের সাথে থাকা মোট ৪টি মোবাইলের ৩ টি মোবাইল ফেরত পান দুই সাংবাদিক। এছাড়া ফেরত দেয়া হয় দুজনের প্রেস আইডি কার্ড, মানিব্যাগ, গাড়ির চাবি ও গাড়ি। কিন্তু, ফেরত দেননি OPPO- A58 মডেলের মোবাইল ফোন, দুজনের মানিব্যাগে থাকা নগদ ২৭,৫০০/- (সাতাশ হাজার পাচশত) টাকা, সোহাগ হাওলাদারের ডান হাতে থাকা ৫ ভরি ৯ আনা ৩ রতি ওজনের ১টি রুপার ব্রেসলেট।
শুধু মাত্র প্রমান না থাকার কারণে সেদিন অসহায়দের মতো সবকিছু নিরবে মেনে নেন ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক সোহাগ হাওলাদার ও মো: ইস্রাফিল। সূত্র মতে, এস আই আমিনুর ও আজিজ-মনিরের সন্ত্রাসী বাহিনী দুই সাংবাদিককে আটকের ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চাপে ফেলে তাদের নগদ টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও রুপার ব্রেসলেটি আত্মসাৎ করে। সেদিন অনেকটা বাধ্য হয়েই সাংবাদিক সোহাগ হাওলাদার ও মো: ইস্রাফিল ওই তথাকথিত আপোষের কাগজে স্বাক্ষর করেন। ভুক্তভোগী সূত্রে আরও জানা যায়, তাদের সাথে ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনার কোন প্রমাণই ছিলো না তাদের কাছে। পরে আজিজ ও মনির বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের চিকিৎসা নিয়ে একটু সুস্থ হলে ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোহাগ হাওলাদারের মোবাইলের সমস্ত ডকুমেন্ট ও ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেন। ডাটা রিকভারি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করে দেখা যায় ২ ঘন্টা ৫১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। আর সেই ভিডিওতেই সকল অপরাধীর মুখোশ উন্মোচন হয়। যা বর্তমানে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। ভিডিওতে দেখা যায় সেদিন ওয়াসা ভবনে দুই সাংবাদিকের সাথে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার নেপথ্যের কাহিনী। দেখা যায়, ভদ্র মানুষের মুখোশ পড়ে থাকা আজিজ ও মনির গংদের সন্ত্রাসী তাণ্ডব। ভিডিওতেই প্রকাশ পায় এসআই আমিনুরের প্রকৃত রূপ। মানুষ রুপি এমন কিছু অমানুষ পুলিশের কারণেই পুরো পুলিশ বাহিনী এখন ইমেজ সংকটে ভুগছেন। এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোবারক হোসেন বলেন, এস আই আমিনুরের এমন বিতর্কিত কর্মকান্ড সত্যিই পুলিশ বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।