ঢাকামঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
ঢাকামঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইসিটি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আফ্রিকা
  6. ইসলাম
  7. এশিয়া
  8. কলাম
  9. ক্রিকেট
  10. খেলা
  11. চাকরী
  12. জাতীয়
  13. জেলা
  14. জেলা সংবাদ
  15. নিয়োগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পারিবারিক দ্বন্ধে রাজনীতি তে তোলপাড়

সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১২, ২০২৫ ৪:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সন্দ্বীপ উপজেলা যুবদল নেতা আজিজের বিরুদ্ধে ভাইয়ের বিক্রিত বসতি-জমি দখল ও নিরপরাধ পরিবারকে হামলার অভিযোগ
সন্দ্বীপ উপজেলায় যুবদলের সদস্য সচিব আজিজের বিরুদ্ধে তার বড় ভাই আব্দুল কাদেরের বিক্রিত বসতি-জমি দখল এবং এক অরাজনৈতিক ব্যক্তি, দিনমজুরকে পারিবারিক কথা কাটাকাটি নিয়ে, পালিত কিশোর গ্যাং দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন চাঁদাবাজি, জোর করে খামার থেকে মৎস্য আহরণ সহ নানান অপকর্মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ৪ঠা জানুয়ারি শনিবার সকালে তার নিজের বাড়ির এক অসহায় পরিবারকে টাঙ্গিয়ে ফেলবে বলে শাসিয়ে যায়। তার অত্যাচারে ভুক্তভোগীরা দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। লিখিতভাবে দলীয় কোনো পরিচয় স্থানীয় পর্যায়ে অনুসন্ধান করেও পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আজিজ এসব করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী মোঃ সিরাজ (৩৭), মোঃ শাহজাহান (৩৩), মোঃ স্বপন (৫০) পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে মোঃ আব্দুল কাদের (আজিজের বড় ভাই) সিরাজুল মাওলা (৬৫) এর কাছে ১,৩৫,০০০/- টাকায় বিএস নামজারি খতিয়ান নং ১১৩৫ এবং বিএস ৩৪০৬ ও ৩৪১০ নং দাগের জায়গা স্থানীয় মুরুব্বিদের মোকাবিলায় বিক্রি করেন। এর পর থেকে ওই বসতি-বাড়িতে ক্রেতা সিরাজুল মাওলার বোন জামাই জেবল হক তার পরিবার নিয়ে বসবাস (২০১২ সালে মৃত্যু বরণ করেন) করে আসছিলেন। কিন্তু সন্দ্বীপে জায়গার মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ক্রেতা নিজের নামে নামজারি না করায় (বার বার বলেও নামজারি করে দেয়নি। আব্দুল কাদের বলতো আমরা কখনো এসব চাইবো নাকি আবার?) এপ্রিল ২০২৪ এ আব্দুল কাদের তার ভাই যুবদল নেতা আব্দুল আজিজকে উক্ত জায়গা পুনঃ দখলের জন্য জানায়।
আজিজের নানান হুমকি ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে ক্রেতা সিরাজুল মাওলা এর ভাগিনা মোঃ শাহজাহান (প্রকাশ- হেজন) বাদী হয়ে মোঃ আব্দুল কাদের (আব্দুল আজিজের ভাই), পিতা মৃত ওমর আলী এর বিরুদ্ধে মামলা করেন যার বিজ্ঞ আদালতের স্বারক নং ১৯২/২৪, ১০/০৫/২০২৪ (বিচার প্রক্রিয়াধীন)।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে উক্ত মামলার সকল কার্যক্রমকে ব্যর্থ করতে যুবদল নেতা আজিজ তার রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গেলো ৪ঠা জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিঃ জাহজাহানের বড় ভাই সিরাজের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩২) কে ঘরে একা পেয়ে শারিরীক নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। রোজিনার চিৎকার চেচামেচি শুনে তার ননদ সহ তার মামারা ছুটে আসেন।
ততক্ষণে রোজিনার সাথে হাতাহাতির এক পর্যায়ে আজিজের গালে ও নাকের এক পাশে নখের আঁচড় লাগে। সবাই আজিজের এমন আচরণ দেখে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে সে নিজের ছবি মোবাইলে ধারণ করে তাৎক্ষণিক প্রিন্ট করার ব্যবস্থা করেন।
পরবর্তীতে সে ছবি সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সহানুভূতি ও দলীয় সমর্থন যোগাতে শীর্ষ নেতাদের কাছে ছড়িয়ে দেন। সেখানে আজিজ দাবী করেন তাকে আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মারা হামলা করে খুব মারধর করেছে।
অন্যদিকে তার ঘৃণ্য পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সে তার গুন্ডাবাহিনি এনে উপস্থিত রোজিনা সহ রোজিনার মামা স্বপন, আলাউদ্দিন এবং ভাই শিবলিকে মারধর করে।
তারা উক্ত ঘটনার ন্যায় বিচারের দাবী নিয়ে সন্দ্বীপে দায়িত্বশীল নেভির কাছে যেতে চাইলে, পথিমধ্যে আজিজ তার বাহিনী দিয়ে পুনরায় হামলা করে মোঃ সুমন (প্রকাশ স্বপন), হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার মোঃ আলাউদ্দিন, মোঃ শিবলী, রোজিনা, রেখা, নয়নদের বেপরোয়া মারধর ও শ্লীলতাহানি করে। এক পর্যায়ে মহিলাদেরকে বাড়ির দিকে চলে যেতে বাধ্য করে স্বপন, আলাউদ্দিন ও শিবলিকে সন্দ্বীপ থানার হেফাজতে বিকেল ২:৩০ মিনিটের দিকে সোপর্দ করে।
সেখানে আজিজের গুন্ডা বাহিনি নিজেদের উত্তোজিত জনতা পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদের আওয়ামীলীগ ট্যাগ লাগিয়ে, আজিজ তার কোরামের সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাকে মামলা নিতে সন্দ্বীপ থানা পুলিশকে অনুরোধ জানায়। তারা এক পর্যায়ে থানা এলাকায় আজিজের সমর্থনে মোটরসাইকেল শো-ডাউন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
ফেইসবুকে ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন ঘটনার আসল রহস্য না জেনেই আজিজের বানোয়াট কাহিনি ও মহিলাদের সাথে হাতাহাতিতে তার খামচি খাওয়ার ছবি দেখে আজিজের উপর কথিত হামলার প্রতিবাদে রাজনৈতিক পোস্ট করেন। মূহুর্তে সেই পোস্ট সন্দ্বীপে উত্তেজনা সৃষ্টি করে বিভিন্ন জায়গায় মিছিল-মিটিং শুরু হয়।
সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক গাজি মোহাম্মদ হানিফ সহ অনেক নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন’র পোস্টকে কপি পোস্ট করেন। ফলে রাত থেকে শুরু নানান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তৎফরতা ও ধড়-পাকড় অভিযান।
এসব ঘটনার আগে একই দিন বেলা ১২টার দিকে আজিজের নিজ বাড়িতে, তার ঘরের সামনে এক ঘর পরেই দিন মজুর ৫০ ঊর্ধ মোঃ জসিমের বউ তাসলিমা বেগম (৪০) এর সাথে আজিজের ভাবির নিজেদের উঠানে কম্বল শুকানোর জায়গা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। সে সময় আজিজ মোঃ জসিমের স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে অশালীন ভাষায় শাসিয়ে যায় এবং মারার হুমকি দিয়ে যায়। আর তাসলিমা তার বাপের বাড়িতে কাথা-কম্বল আনতে চলে যায়। এরপর আজিজ বাড়ির ঘাটার দিকে গিয়ে রোজিনার সাথে হাতাহাতির ঘটনা সহ উপরে বর্ণিত হামলা ও নির্যাতনগুলো করে।
মারধরের পর সন্দ্বীপ থানায় ৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে দিয়ে আজিজ আবার তার গুন্ডা বাহিনীর প্রধান সদস্য ১/ মোঃ পারভেজ, পিতা- মোঃ হাফিজ, মুরাদের গো বাড়ি; ২/ মোঃ মাকসুদ, কাজি আশ্রাফ মেম্বারের বাড়ি; ৩/ মোঃ আরজু (২৮), পিতা- সাবের আহমেদ, ৪/ মোঃ আজিজ প্রকাশ শিবলি (২৯), পিতা-জেবল হক সহ প্রায় ২০ জনের গ্রুপকে আবারো তার বাড়ির দিকে আসতে বলে এবং হামলার নির্দেশনা দেন। তারা বাড়িতে এসেই ঘরে ঢুকে মোঃ জসিম (৫০) কে লোহার রড সহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে মেরে মুমূর্ষু করে মসজিদ বাড়িতে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ফেলে রেখে যায়। এ সময় জসিম ও তার বড় মেয়ে মার্জিয়া বার বার নিজেদেরকে নির্দোষ, অসহায়, দিন মজুর বলে আর্তনাদ করেও নির্মম এই অত্যাচার থেকে রেহায় পায়নি।
তাসলিমার বড় মেয়ে (প্রত্যক্ষদর্শী) বাপের এই করুণ অবস্থার কথা আত্মীয়-স্বজনদের জানায়। বিকেল ৪:১৬ মিনিটে সন্দ্বীপ থানা পুলিশের অফিসার ইন চার্জকে এই ঘটনা জানানো হলে, তিনি সেখানে আজিজের সমর্থনে চলতে থাকা বিভিন্ন মিছিল ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কথা জানায়। তিনি আরো জানান যে- আজিজ নিজেও তখন থানায় উনার সামনে উপস্থিত।
ঘটনার মোড় বুঝতে পেরে আজিজ তার গুন্ডা বাহিনীকে নতুন করে কমান্ড করে- তারা যেন মোঃ জসিমকে আওয়ামীলীগ ট্যাগ লাগিয়ে পূর্বের ৩ জনের মতই এনে থানায় সোপর্দ করে, বিএনপি নেতাদের সে বুঝিয়ে নিবে যে- আওয়ামী লীগ ও তার প্রেতাত্মারা আজিজের উপর হামলা করে তাকে ব্যাপক মারধর করেছে। ফলে সন্দ্বীপ থানায় তার এ ঘটনায় ৪ জন সোপর্দ হয়, যা নেতা-কর্মীদের ফেইসবুক ও সন্দ্বীপ থানা সূত্রে জানা যায়।
তার এসব পারিবারিক কলহ ও জায়গা-সম্পত্তি দখলের কুকর্মকে ঢাকার অংশ হিসেবে তার গালে ও নাকে ভিকটিম রোজিনা সহ অন্যদের দেয়া নখের আঁচড় ও খামচির প্রিন্ট করা ছবি নিয়ে, বিএনপি’র সন্দ্বীপের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সাথে স্ব-শরীরে দেখা করে।
সেসব ছবি দেখিয়ে সে সহজেই নেতাদের সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে পারিবারিক কলহ ও পূর্বের জায়গা-জমি দখলের ব্যক্তিগত ঘটনাকে রাজনৈতিক মোড়কে ঢেকে দিয়ে, নিজেকে অসুস্থ প্রমাণে সব সাক্ষাৎ ও কার্যক্রম শেষে গাছুয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয় বলে সরোজমিনে অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে।
নির্যাতনে মোঃ জসিমের শারিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে তাকে গাছুয়া সরকারি হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সারা রাত ব্যথার যন্ত্রণা শেষে, সকালে দায়িত্বরত ডাক্তার তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করেন।
বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। রাতে “বাংলাদেশ সাংবাদিক পরিষদ” থেকে তাকে দেখতে গেলে জানা যায়- বেদম প্রহারের কারণে তার শরীর মাংস থেতলে গেছে, চোখের পাশে নীলা ফুলা, এক্স-রে রিপোর্টে নাকের হাড়ে ফাটল সহ মারাত্মক অসুস্থ অবস্থা।
তবে এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় রাজনৈতিক মোড়কে আজিজ বাদী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপরের নির্দেশনায় ভিকটিমদের নামেই মামলা দায়ের করেন বলে দাবী করেন ভিকটিমদের পরিবার।
ঘটনার অনুসন্ধানে আমাদের টিম সন্দ্বীপ এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে যে- আজিজ বাদি হয়ে সন্দ্বীপ থানার মামলা নং ০১ তাং ০৪/০১/২০২৫ এ ধারা ১৪৩ /৩৪১ /৩২৩/ ৩২৪/ ৩২৫ /৩০৭ /৩৭৯ /৫০৬(২) /৩৪ পেনাল কোড রুজু করান।

উক্ত মামলায় আটককৃত ৪ জন পুরুষ সহ ভুক্তভোগীদের পরিবারের ৪ জন মহিলাকেও আসামি করা হয়।

তবে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে এটি মূলত পারিবারিক ঝামেলা ও জায়গা দখলের কোন্দল। যুবদল নেতা আজিজ তার রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে হিরো সাজাতে গিয়েই এই ঘটনা পরিকল্পিতভাবেই করেছে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এস এ মুরাদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- “উভয় পক্ষ থেকে আমাকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। লিখিত আকারে অভিযোগ পেলে দলীয় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।